'ভিক্টরি কার্নিভালে' বিজয়ের আমেজে উদ্যোক্তা প্রদর্শনী
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বিজয়ের আনন্দ প্রকাশের এক অনন্য মাধ্যম হচ্ছে সাজপোশাক, ফ্যাশন আর নিত্য ব্যবহার্য সবকিছুতেই লাল সবুজের ব্যবহার। দেশি উদ্যোক্তাদের জয়যাত্রা বিজয় দিবসের সত্যিকারের আবেগ আর মূলমন্ত্রকে সবসময়ই ধারন করে তাঁদের কাজের মধ্য দিয়ে।

সেই ভাবনারই দারুণ প্রকাশ ঘটেছে রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২ বছরের বিজয় দিবস উপলক্ষে "ভিক্টরি কার্নিভ্যাল" নামে বিশেষ উদ্যোক্তা পণ্য প্রদর্শনীতে। লবে এই আয়োজন সকাল ১১ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। দেশী বিদেশী বিভিন্ন পণ্য নিয়ে মোট ৮০টি স্টল আছে এখানে। 

বিজ্ঞাপন

মাইডাস সেন্টারের ১২ তলায় ঢুকতেই লাল সবুজের আবহে সুন্দর করে সাজানো প্রবেশপথ মন ভালো করে দেয়। ঘুরতে আসা শিশুদের জন্য রয়েছে বিনোদন ও লাইভ মিউজিকের আয়োজন। ফুচকা, মোমো, চাওমিন থেকে শুরু করে দেশস-বিদেশি সব ধরনের খাবারের সমারোহ দেখা যায় মেলায়। পুরো মেলা ঘুরে দুটো স্টলে দেখা গেলো শুধুমাত্র দেশীয় পণ্য। কথা হয় "পূর্ণতা শিল্পশালা" -এর স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার সুলতানা জান্নাত শিখার সঙ্গে। আড়াই বছর ধরে কাজ করছেন তিনি তাঁত নিয়ে। সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁতের শিল্পীদের কাজগুলোকে একত্রিত করে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেন তিনি।

ন্যূনতম মূল্যে  এসব পণ্য ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে  বিক্রি বাড়ানো। তাঁতের পণ্য বিক্রি বাড়লে তাঁতিদের কাজ বাড়বে। নারায়ণগঞ্জের জামদানি, জামালপুরের হ্যান্ডলুম পণ্য, রাঙামাটি, উত্তরের শেষ অঞ্চল পঞ্চগড়ে তাঁতিরা উল দিয়ে কম্বল বোনেন। সেখান থেকে পণ্য নেয়া হয়। নিজস্ব তাঁতের খাদির শালের উপর প্যাচওয়ার্ক করে  আর দিনাজপুরের কাঁথাস্টিচ ব্যবহার করে বানানো দারুণ সব শাল দেখা গেলো স্টলে। গার্মেন্টসের ফ্যাশন বর্জ্য দিয়ে তৈরি করা হয় বলে কম্বল ও কম্ফর্টারগুলোর দাম খুবই কম। মাত্র ৫৫০-৭৫০ টাকার মধ্যে। এ উদ্যোগকে রিসাইকেলিং ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়াস বলে জানান তিনি। মানুষ যাতে বিদেশি পণ্যের থেকে দেশি পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহী হয় সেটাই তাঁর চাওয়া। 

বিজ্ঞাপন

এছাড়া কথা হয় "অরাম"- এর সিইও ও চিফ ডিজাইনার নিশা তানজুমের সঙ্গে। উনি পেশায় একজন আইনজীবী। বিগত ৭ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন । দুটো আউট লেট রয়েছে ঢাকায়। মূলত হ্যান্ড ব্লক পেইন্ট নিয়ে কাজ শুরু করে "অরাম" এবং এখন পর্যন্ত তারা ক্রেতাদের কাছে সুনামের সঙ্গে পণ্য বিক্রি করছে। "সিএসআর প্রজেক্ট"  নিয়ে কাজ করছেন নিশা। মেলায় "শেয়ারিং ইজ কেয়ারিং"  মূলমন্ত্র নিয়ে সকল পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় থাকছে। মেলায় বিক্রির ৫০ ভাগ টাকা উপকূলীয় অঞ্চল কক্সবাজারের নারীদের মাসিককালীন স্বাস্থ্যের অর্থায়নে ব্যবহার করা হবে বলে জানান তিনি ।

"মামনিসের" স্টলে দেখা যায় বিভিন্ন রকমের আচার দাম ১০০-২২০ টাকা । নুসাইবা’স কিচেনে খুদের ভাত থেকে শুরু করে ,লালক-সবুজের থিমে ফালুদা আর ভিন্ন স্বাদের মুখরোচক মোমো। জয়নব কালেক্সশন্সে দেখা যায় দেশী  বিদেশী গহনা । ডেনিম নিয়ে ভিন্ন রকম কাজ দেখা যায় এরন ক্লদিং-এ  ফতুয়া , শার্ট  আর মেয়েদের কুর্তি রয়েছে ডেনিম দিয়ে তৈরি । এস কে গ্যালারিতে দেখা গেলো বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ব্যাগ, বাচ্চাদের পণ্য নিয়ে নুরজাহান খানম বৃষ্টি আছেন। মায়েদের ভিড় দেখা গেলো সেখানে । হাফিন এন্টারপ্রাইজ আছে আরএমজি পণ্য । টুকিটাকি উপহার সামগ্রী আর জুয়েলারি দেখা গেল "আজরিন্স কালেকশন"-এ । "চেক এন বাই"-এর  স্বত্বাধিকারী সাদিয়া জানালেন, দেশি,  ভারতীয় আর পাকিস্তানি পণ্য নিয়ে নিজ উদ্যোগেই কাজ করে যাচ্ছেন আর  গুনগত মানের জন্য প্রশংসা পাচ্ছেন ক্রেতাদের কাছে।

ছবি: হালফ্যাশন

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭: ৪৫
বিজ্ঞাপন