২৫০০ জনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো ‘ইনফিনিটি রান ফর দ্য আর্থ ২০২৫’
শেয়ার করুন
ফলো করুন

রাজধানীর হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটারজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২ হাজার ৫০০–এর বেশি নিবন্ধিত দৌড়বিদ এই ম্যারাথনে অংশ নেন। দ্য অ্যাথলিট এক্স-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই দৌড়ে অংশগ্রহণ করেন ফিটনেসপ্রেমী মানুষ, পরিবার, তরুণ সংগঠন এবং পরিবেশসচেতন নাগরিকেরা। আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল একটি সুস্থ পৃথিবী ও টেকসই জীবনধারা গড়ে তোলায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। এটি শুধু একটি প্রতিযোগিতামূলক দৌড় ছিল না, বরং পরিবেশ সচেতনতা, সামাজিক সংহতি ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের এক প্রাণবন্ত উৎসবে রূপ নেয়।

এ বছরের আয়োজনকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে এর পরিবেশবান্ধব উদ্যোগগুলো। পুনর্ব্যবহৃত উপকরণে তৈরি দৌড়ের জার্সি, পানির জন্য প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাগজের কাপ ব্যবহার, ছাপানো পোস্টারের বদলে ডিজিটাল বোর্ড এবং দৌড়পথজুড়ে পাট ও সুতি কাপড়ে তৈরি সাজসজ্জা—সবকিছুই পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমানোর লক্ষ্যেই পরিকল্পিত ছিল। অংশগ্রহণকারীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসব উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

বিজ্ঞাপন

আয়োজনজুড়ে ছিল দায়িত্বশীল কিন্তু উৎসবমুখর এক আবহ। সব বয়স ও সক্ষমতার দৌড়বিদেরা কেবল নিজেদের শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করতেই নয়, বরং পৃথিবীর প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ করতেই দৌড়ে অংশ নেন। পরিবার ও বন্ধুদের উৎসাহ, কমিউনিটি গ্রুপের সম্মিলিত উপস্থিতি এবং ফিটনেস কমিউনিটির উদ্‌যাপন যোগ করে ভিন্ন মাত্রা।

রান ফর দ্য আর্থের রেস ডিরেক্টর ও দ্য অ্যাথলিট এক্সের প্রতিষ্ঠাতা কে এম ইয়াসির আরাফাত অমি বলেন, ‘এই আয়োজন আমাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন-টেকসই কেবল আলোচনার বিষয় নয়, এটি বাস্তব জীবনের চর্চা। যখন হাজারো মানুষ একসঙ্গে এসে পুনর্ব্যবহৃত জার্সি বেছে নেয়, প্লাস্টিককে না বলে তখনই সম্মিলিত উদ্যোগের প্রকৃত শক্তি প্রকাশ পায়। এভাবেই আমরা একটি সুস্থ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি—একটি পদক্ষেপে, একটি সিদ্ধান্তে, একজন দৌড়বিদের মাধ্যমে।’

বিজ্ঞাপন

ইভেন্টের অ্যাম্বাসেডর এম ডি তারেক উদ্দিন বলেন, ‘রান ফর দ্য আর্থ’ করপোরেট জগতের জন্য একটি শক্তিশালী উদাহরণ, যেখানে পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা, কর্মীদের সুস্থতা এবং সমাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। এ ধরনের লক্ষ্যভিত্তিক উদ্যোগ ব্যবসা ও সমাজ—উভয়ের জন্যই দীর্ঘমেয়াদি সুফল বয়ে আনে।’

শৌখিন রানার নাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘নিজের ঐতিহ্য ধারণ করা এক দারুণ গর্বের বিষয়। তাই ইনফিনিটি রান ফর দ্য আর্থে আমি টাঙ্গাইল শাড়ি পরে দৌড়েছি।ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শাড়ি বয়নশিল্প। বহু বছর টিকে থাকা এই ঐতিহ্য আমাদের পোশাকসংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।’

ফিনিশ লাইনে পৌঁছানোর সময় দৌড়বিদেরা শুধু মেডেলই অর্জন করেননি, তাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন টেকসই জীবনযাপন ও পরিবেশ রক্ষার এক সচেতনতার বার্তা। এই ইভেন্টের টাইটেল স্পনসর ইনফিনিটি পরিবেশবান্ধব ব্র্যান্ডিং নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, যা প্রমাণ করে করপোরেট দায়বদ্ধতা ও কমিউনিটির কল্যাণ একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। প্রথমবারের মতো হালফ্যাশন এই পরিবেশবান্ধব আয়োজনের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে পাশে ছিল।

ছবি: আয়োজক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৫
বিজ্ঞাপন