রাজধানী ঢাকার আয়তনে সবচেয়ে বড় ও জনবহুল বস্তি কড়াইল। গুলশান-বনানীর মতো আধিপত্যে মোড়ানো এলাকার ঠিক অন্য পাশে অবস্থিত এই বস্তি। গুলশান ও বনানী থেকে কড়াইলকে আলাদা করেছে শুধু একটি জলের ধারা। বলা যায় লেকের এপারে গুলশান; ওপারে কড়াইল। গিয়েছিলাম ‘মজা করি’ উৎসবে। কড়াইলবাসীদের জন্য কিছু করতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে পাড়া বাংলাদেশ, গ্যেটে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ ও জার্মানির ফ্লোটিং ইউনিভার্সিটি একযোগে আয়োজন করে এ উৎসবের। অন্যতম আয়োজক গ্যেটে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে মর্মী মাহতাব বলেন, এই উৎসব তাঁদের এ বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর একটি। কড়াইলেরও নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, সেটাকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার এটি ছিল এক মোক্ষম সুযোগ।
‘মজা করি’র স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে কাজ করেছে হাল ফ্যাশন। সেই সূত্রেই যাওয়া। এটি মূলত একটি ডিজাইন ফেস্টিভ্যাল। আরেকটি উদ্দেশ্য অবশ্য ছিল। ‘মাচান’-এর উদ্বোধন। মাচান হলো একটি মঞ্চ। কড়াইলবাসীদের নিজস্ব মঞ্চ, যেখানে তারা নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারবে। নাচবে, গাইবে, অভিনয় করবে, প্রকাশ করবেন নিজেদের সুপ্ত প্রতিভা। এমনিতে মাচান একটি ইটের তৈরি দোতলা মঞ্চ। ওপরে ওঠার জন্য সিঁড়ি আছে। ওপরে গিয়ে দাঁড়ালে বস্তির অনেকখানি দেখা যায়। মাচানের নকশা করেছে পাড়া আর্কিটেকচার টিম। বাস্তবায়নে সাহায্য করেছেন কড়াইলের মানুষ। এরশাদ মাঠে পা রাখার আগপর্যন্ত অতটা বুঝে উঠতে পারিনি। তবে যাওয়ার পর সত্যিই মনে হলো, কড়াইল বস্তির এইটুকু এলাকায় আটকা পড়েছে গোটা বাংলাদেশ। কী নেই এখানে!
‘মজা করি’ নিয়ে যাঁরা দিনের পর দিন নিরলস খেটে গেছেন, তাঁর মধ্যে সামনের সারির একজন হলেন তারান্নুম আলী নিবিড়। তিনি বলেন, ‘“মজা করি” নামের পেছনে লুকিয়ে আছে অনেক মানুষের কঠোর পরিশ্রমের গল্প। খাতা-কলমে যদিও আমরা বলি বছর দুয়েক, কিন্তু প্রায় সাড়ে তিন বছর সময় লেগেছে এই অনুষ্ঠানের বাস্তবায়নে। তাঁদের মূল ভাবনা ছিল এই শহরের মানুষ রেস্টুরেন্ট বাদে ঘুরতে যেতে পারে এমন জায়গার সংখ্যা খুব কম। যদিও–বা আছে, সেখানে সব শ্রেণির মানুষের অবাধ প্রবেশাধিকার ও বিনোদনের সুযোগ নেই।’ কড়াইলের মানুষের জন্য এমন একটি মুক্ত ও আনন্দ পাওয়ার নিরাপদ জায়গা সৃষ্টি করা ছিল তাঁদের লক্ষ্য। নিবিড় শেষে হেসে যোগ করলেন, মাচান একটি নিশ্বাস নেওয়ার জায়গা। বিশেষ করে মেয়েদের।
প্রথম দিন যেতে না যেতেই হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি নীল-গোলাপি কাগজ। তাতে আঁকা আছে মানচিত্র। কড়াইলের মানচিত্র। বাংলাদেশের মানচিত্রের চেয়ে কম কিছু নয়। এখন এই অ্যাটলাস দেখে পথ চিনে চিনে যেতে হবে। পথ চিনে এগিয়ে যাওয়ায় আমি বরাবরই কাঁচা। ইতস্তত করছি। কালো টি-শার্ট আর গোলাকৃতি চশমা পরা এক মেয়ে এগিয়ে এলেন। জানালেন, তিনি এখানকার স্বেচ্ছাসেবক। আমাকে পথ চিনিয়ে নিয়ে যাবেন। প্রথমে যেতে হবে মাটির রাস্তায়, সেখানে হচ্ছে ছবির প্রদর্শনী। গলিঘুপচি দিয়ে আমি যাচ্ছি মুনিয়ার পিছু পিছু। কথা হচ্ছে টুকটাক। জানতে পারলাম, তিনি কড়াইলেরই মেয়ে। এখন তিতুমীর কলেজে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক পর্যায়ে পড়ছেন। মানুষ ও মন নিয়ে মুনিয়ার ব্যাপক আগ্রহ। আগ্রহ আছে ছবি তোলায়ও। যে প্রদর্শনী দেখতে যাচ্ছি, সেখানে তাঁর তোলা ছবিও আছে। এখানে শুধু তিনি নন, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আছেন আরও ৪০-৫০ জন তরুণ-তরুণী।
মাটির রাস্তাটি বেশ সরু। তিন-চারজন পাশাপাশি হাঁটতে কষ্ট হয়। রাস্তার দুপাশে সাদাকালো ছবিগুলো প্রিন্ট করে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে চোখে পড়ল কতগুলো পা আর জুতার ছবি। মুনিয়া জানালেন, এগুলো তাঁরই বন্ধু জনির তোলা। আমি চাইলে তিনি আমাকে জনির সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে পারবেন। আমার হুট করে জনির সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রবল হলো। কারণ আমার মনে হলো, ছবিগুলোর পেছনে গল্প আছে। পরে জনির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি যে তাঁর ছোট ভাই মসজিদে গিয়ে প্রতি শুক্রবার জুতা হারিয়ে আসেন বলে তাঁকে মনখারাপ করে থাকতে দেখে বোনের ভারী কষ্ট হয়। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, জুতা তিনি খুঁজে বের করবেন। জুতা শেষমেশ তিনি খুঁজে পান না। তবে তিনি বুঝতে পারেন যে জুতাই একমাত্র জিনিস, যা মাটি থেকে মাটির মানুষকে আলাদা করে রাখে। জুতা না থাকলে মাটির তৈরি মানুষ আবার ফিরে যায় মাটিতে।
যে মেয়ে চিরকাল এখানেই বেড়ে উঠেছেন, তাঁর এমন দার্শনিক চিন্তাভাবনা দেখে আমি বেশ অবাকই হলাম। পরে জনির সঙ্গে উৎসব নিয়ে কথা হলো। তিনি জানান, এই উৎসবে তাঁদের কমিউনিটির মানুষের চেয়ে বেশি আনন্দ করেছেন বিদেশিরা। বার্লিনের ফ্লোটিং ইউনিভার্সিটি থেকে জেন নামের এক ভদ্রমহিলা এসেছিলেন। আরও আগে কেন এলেন না, এ নিয়ে তাঁর আফসোসের শেষ ছিল না। জনির কাছে আক্ষেপ জানাতে গিয়ে নিজেকে নাকি রীতিমতো ‘স্টুপিড’ বলে দাবি করে বসেছিলেন! ভাবলাম, একে কি তবে ‘ফ্যাসিনেশন অব অ্যাবমিনেশন’ বা ‘ফ্যাসিনেশন অব অ্যাট্রাকশন’ বলে?
‘মজা করি’ উৎসব যেন ছিল কড়াইলের শিশুদের জন্য ঈদের দিন। তারা সবাই সেজেছিল রঙিন সাজপোশাকে। ছোট মেয়েরাও পরেছিল শাড়ি। হয়তো বছরে পাওয়া একটি নতুন জামা আলমারি থেকে বের করে পরেছে এই উৎসব উপলক্ষে।
মাটির রাস্তার পাশে টাঙানো ছবিগুলো আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম। একটি রিসাইকেলড দোলনা ঘিরে ছিল শিশুদের ভাড়। সবাই সার বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিল দোলনায় ওঠার সুযোগের অপেক্ষায়! এ ছাড়া জায়গায় জায়গায় আয়োজিত হয়েছে নানা কর্মশালা। ছিল টাই-ডাই, কারচুপি, প্রিন্ট মেকিংয়ের কর্মশালা ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনা। ডিজাইন নিয়েও ছিল একটি আলোচনা।
কারচুপি কর্মশালা হচ্ছিল মাচান থেকেই খানিক দূরে একটা ছোট্ট ঘরের ভেতরে। বাড়িটির মালিক জসিম ভাই। সেখানে কারচুপি কাজের সরঞ্জাম পাতা হয়েছিল। কারচুপি শেখাচ্ছিলেন মুক্তা নামের এক মেয়ে। কী নিখুঁত হাতের কাজ! আমি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। বেশ ভিড়। কারচুপি কর্মশালা নিয়ে মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না।
ফিরে এসে আমি বন্ধুদের কাছে বেশ জমিয়ে গল্প করলাম। দু-একজন ‘মজা করি’ উৎসবের নামে বেশ মজা পেল। পরদিনই কারচুপি ও ন্যাচারাল ডাই কর্মশালার জন্য দল বেঁধে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলল। পরের শুক্রবার কর্মশালার অংশ হতে কড়াইলে গিয়ে নিজেরাও সারা দিন বেশ হইচই আর মজা করে ফিরে এল।
তবে যে ব্যবস্থা আমার সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে, সেই প্রসঙ্গটা ঘরের। মা মরিয়ম কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শেখানো হচ্ছিল প্রিন্ট মেকিং। প্রথমে তৈরি হচ্ছিল লম্বাটে প্লাস্টিকের ফ্রেম। গাঢ় নীল রঙে সেই ছাঁচ রেখে ছাপ দিয়ে আঁকা হচ্ছিল ছবি। শেখাচ্ছিলেন তরুণ শিল্পী সুবর্ণা মোর্শেদা। কথা বলে জানতে পারলাম, যেসব শিশু প্রিন্ট মেকিং শিখছে, তাদের অধিকাংশেরই বাড়ির অস্তিস্ত্ব নেই। হয়তো নদীভাঙনে বাড়ি বিলীন হওয়ার পর ঠিকানা হয় এই বস্তি। তাদের কল্পনায় নিজের বাড়ি কেমন, সেই ছবিই তিনি প্রিন্ট মেকিংয়ের মাধ্যমে কাগজে ধরে করে রাখতে চেয়েছেন। এসব ছবি দিয়ে একটি পুরোদস্তুর অ্যালবাম তৈরি হবে।
এমন আরেকটি ব্যবস্থা দেখে এসেছিলাম মাটির রাস্তায়ও। সেখানে অনেকগুলো শিশু তাদের চোখে ভবিষ্যতের কড়াইল কেমন, তা নিয়ে ছবি এঁকেছে। স্থপতি ফারহানা নিজামের সঙ্গে আলাপ হলো সেখানে। তিনি জানালেন, ছবিগুলো মূলত একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ফসল। প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সুন্দর ও স্বাপ্নিক ছবিগুলো টাঙানো হয়েছে এই বাঁশ দিয়ে বানানো কাঠামোতে। কড়াইলের বাসিন্দারা যে ঠিক কতটা স্বাপ্নিক ও সৃজনশীল, তা টের পেলাম ‘টক’ শুনতে গিয়ে। কড়াইলেরই দুটি ছোট্ট মেয়ে বই লিখেছে! তাদের গল্প নিয়েই আয়োজিত হয়েছিল টক। বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনলাম কিছুক্ষণ।
‘মাজার’ নামের একটি জায়গায় দড়ি পাকিয়ে শিশুরা কিছু একটা বানাচ্ছিল। জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী বানাচ্ছ?’ একটি শিশু বেশ লাজুক। ওড়নায় মুখ লুকিয়ে খুব নিচু স্বরে বলল, ছেঁড়া শাড়ির পাড় আর টুকরো কাপড় দিয়ে তারা পাপোশ বানাচ্ছে। ছোটবেলায় আমার নানিকেও দেখতাম, ছেঁড়া শাড়ির পাড় থেকে সুতা উঠিয়ে পাপোশ বানাতেন। সেসব এখন ‘রিসাইকেলড অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ওয়ার্ক’ নামে বেশ পরিচিতি পেয়েছে জেনে আনন্দ হলো। ভাবলাম, নানুকে গিয়ে আজই বলতে হবে তাঁর ঘরের কোণে লুকিয়ে রাখা সৃজনশীলতার এখন কত নাম-জশ হয়েছে!
আয়োজনের প্রথম দিন, সন্ধ্যা নেমে এলে এরশাদ মাঠে বেশ অনেকটা জায়গাজুড়ে সুরকি বিছিয়ে আয়োজন করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। সারা দিন ধরে রঙিন বাতিগুলো দেখেছি। অবশেষে তাদের জ্বলতে দেখা গেল। মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে দেখলাম, সন্ধ্যার নরম আলো আশপাশের রঙিন আলোর সঙ্গে মিলেমিশে সত্যি এক অদ্ভুত মায়াময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সুরকি দিয়ে তৈরি করা মঞ্চে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তরুণ-তরুণীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মুনিয়াও। মাচানের উদ্বোধন উপলক্ষে তাঁরা দিনের পর দিন খেটেছেন। মুনিয়ার কাছে জানতে চাই, কেমন লাগছে তাঁর। তিনি হেসে বলেন, ‘খুব ভালো, আপু। কড়াইল বস্তিকে যেন সবাই আলাদা কিছু না ভেবে এই ঢাকা শহরেরই একটা অংশ হিসেবে দেখেন, এটাই আমরা চাই।’
আমার আবার মনে হয়, কড়াইল বস্তি শুধু ঢাকা শহর কেন, ছড়িয়ে আছে গোটা বাংলাদেশ। জনি আর মুনিয়া ছিলেন ডেসিগেনেটেড ফটোগ্রাফার। ঘুরে ঘুরে ছবি তুলেছেন পুরো আয়োজনের। জনির ধারণা, উৎসব জমেছে মূলত সন্ধ্যার পর। রিকশা গ্যারেজের সিনেমার প্রদর্শনীতে বস্তিবাসীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। অনেক আগে বস্তিতে শিল্পী মমতাজের গানের আসর বসত। সেটি ছিল এখানকার একমাত্র বিনোদনের উৎস। সবাই দিনটি জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকত। বহুদিন হয়, সে ব্যবস্থাও নেই। দ্বিতীয় ও শেষ দিনের কনসার্ট এবং রবি ঠাকুরের নাটকে সবাই বেশ আনন্দ পেয়েছে। শেষ দিনের আয়োজনে ‘জরুরি গান সরবরাহ’ শীর্ষক কর্মসূচিতে গান শুনিয়েছে বেতাল।
জনির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, বস্তিতে নাকি এর ভেতর একদিন চটপটির দোকান থেকে আগুন লেগেছিল। আগুন নেভাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সবাই। রিয়েল নামে একটি ছেলের অগ্নি নির্বাপক প্রকল্প দেখে এসেছিলাম প্রথম দিনেই। তবে কম বাজেটের কারণে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই তখন বস্তিবাসীদের নিজস্ব নিয়মেই আগুন নেভানো হয়। আশপাশে থেকে মানুষেরা অর্থসহায়তা ও মশারি দিয়েছিলেন। জনির ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, বস্তির গণ্ডির ভেতর আবদ্ধ মানুষজন যে তাঁদের চিরাচরিত বিশ্বাস থেকে বেরিয়ে উৎসবকে সাধুবাদ জানিয়েছে, এমন নয়। নানা রকম বিধিনিষেধ ছিল। তবে এমন মানুষের সংখ্যা হাতে–গোনা।
দুসপ্তাহের ‘মজা করি’ উৎসব যথানিয়মে শেষ হয়েছে। চার দিন বাদে বাকি দিনগুলোয় ছিল বিরতি। শুধু যে নাচ-গান ও কর্মশালা ছিল, তা কিন্তু একেবারেই নয়। কড়াইলের মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে একদল তরুণ তৈরি করেছিলেন অভিনব সব প্রকল্প। ছিল বায়োস্কোপ, টেলিভিশন, সুই-সুতার কাজের ওয়ালম্যাট। আমার অবশ্য চিঠির প্রকল্পের ধারণাটি ভীষণ ভালো লেগেছে। হাতে লেখা চিঠির প্রতি আমার বরাবরই ভালো লাগা কাজ করে। কড়াইলবাসীদের মধ্যে অনেকেই আছেন দূর দেশে। তাঁদের পরিবারের লোকেরা কীভাবে তাঁদের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করবেন, তা শেখানোই ছিল এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
শেষ হওয়ার পর একদিন পাড়া বাংলাদেশের আরবান রিসার্চ কো-অরডিনেটর আয়েশার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘“মজা করি” উৎসব বেশ মজা করেই শেষ হয়েছে। অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন মাচান কমিটি ও পাড়া বাংলাদেশের তরুণেরা। তাঁদের প্রচেষ্টায়ই এত সব করা সম্ভব হয়েছে। মাচানের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে সন্দিহান ছিলাম।’
আয়েশা বলেন, কড়াইলের মানুষের মঞ্চ রক্ষা করার দায়িত্ব তাঁদেরই। তবে এ কাজে যদি তাঁদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, সে জন্য বিশেষ এক কমিটি গঠন করা হবে। এর নাম তাঁরা দিয়েছেন স্টিয়ারিং টিম। মূলত কড়াইলের তরুণদের নিয়েই এ কমিটি গঠিত। তবে চাইলে আগ্রহী কেউ এ কমিটিতে যোগ দিয়ে জনবল বাড়াতে পারেন। এতে করে মাচানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সহজ হবে। ভবিষ্যতে আবারও একটি ‘মজা করি’ উৎসব হবে বলে আশা করেন আয়েশা। বলেন, ‘মজা তো চালিয়ে যাওয়ার জিনিস। এক আসরেই মজা করা থামিয়ে দিলে চলে নাকি?’
ছবি: সিফাতুজ্জামান পারভেজ ও হাল ফ্যাশন